Friday, April 15, 2011

কিছু মানুষ যাদের কথা সারা জীবনে ভুলব না।

প্রায় এক বছরের মত হয়ে যাচ্ছে আমার বিদেশ জীবনের । যার কেউ নাই তার আল্লাহ আছে। সেই অবস্থার মতই আমি গত এক বছরে অনেক নতুন মানুষ এর সাথে নতুন করে বন্ধুত্ব করার সুযোগ পেয়েছি, যারা আমার এই নির্মম সময়গুলোতে আমার পাশে ছিলেন।


‘ই’ কথা না বললেই নয়। একজন ভাল বন্ধুর সাথে পথ চলার যে কি আনন্দ সেটা বুঝতে পেরেছি ওনাকে দেখে। খুব কাছ থেকে পথ চলা। আমার ইন্টারপ্রিটিশান গুলো তার সামনে প্রকাশ করা এবং সেইগুলো সত্য প্রমাণিত হওয়া, ব্যাপারটা অনেকবারই ঘটেছে। হাবিজাবি অনেক চিন্তা তার সাথে শেয়ার করেছি। একজন ভাল মানুষ পাশে থাকলে যে কি সুবিধা আমি সেটা কাছ থেকে দেখেছি। আমি ভুল করতে গেলেও তিনি শুধরে দিয়েছেন। এই রকম একজন মানুষ বন্ধু হিসাবে পাওয়া আসলেই অনেক ভাগ্যের ব্যাপার।



‘ফা’ এই মানুষটিকে আগে থেকে জানতাম। কিন্তু কখনো মেশার সুযোগ হয়নি। একবারই দেখা হয়েছিল কোন এক প্রোগ্রামে। তারপর কথা হয়নি অনেকদিন। আমার অন্তরের কথাগুলো তার সাথে শেয়ার করার সুযোগ হয়েছে। উনি আমার ছোট নাকি বড়? আমি কনফিউজড। আসলে ওনার বয়স আর আমার বয়স প্রায়ই সেইম। হয়ত বন্ধু হিসাবে আপনি, তুমি করে চলেছে আমার কথাবার্তা। অসাধারণ লেগেছে মানুষটিকে। তার পথ চলাতে অনেক কষ্ট গিয়েছে একবারও বুঝতে দেননি। বলেছেন, সব ঠিক হয়ে যাবে। তার কান্নার সাথে সাথে আমারও কান্না পেয়েছে। তার কষ্টের দিনগুলো শেষ হয়েছে। হুম, দেখা হবে তার সাথে। চুটিয়ে গল্প করে একটা বিকাল পার করার ইচ্ছা আছে।




'টি' আমার চেয়ে অনেক ছোট। প্রথম প্রথম মনে হত, এত ছোট মানুষ আমার কাছে কি চায়? এত ছোট মানুষও যে বন্ধু হতে পারে সেটা বুঝলাম টি এর কাছ থেকে। ওর বেড়ে ওঠাটা দেখেছি একদম কাছ থেকে। ছোটরাই একদিন বড় হয়। ওদের আবেগ থাকবে তাদের কাছে নিয়ে বুঝাতে হবে, এটা ঠিক না, ওটা ঠিক না। কিন্তু আমরা যদি ওদের দুরে ঠেলে দেই, ওদের কাছে টানবে কে? দেশ ছেড়ে এখন বিদেশ আছে সেই টি। তার সাথে অনেক অনেক জায়গা ঘুরে বেড়ানোর ইচ্ছা আছে।


'এস' ডাক্তারী পড়ছে। মহাজ্ঞানী ডাক্তার মানুষ। আমার কেন জানি মনে হয় এস চশমা পড়ে। মোটা কাচের চশমা। তার ভিতর একটা অভিমানী অভিমানী ভাব আছে। আমি জানি এস চশমা পড়ে না। এই রকম কোন ভাবও তার নেই। তার একটা ঝাড়ির কথা আমার সারা জীবন মনে থাকবে। অবশ্য সেই ঝাড়িটা অনেক আগে খেলে আমার জন্য অনেক ভাল হত। মানুষকে নিয়ে ভাবে। সম্ভব অসম্ভব সব রকমের ভাবনা। অনেকেই তো মানুষকে নিয়ে ভাবে, কয়জন এই ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারে। আশা করি, সে পারবে।



আরেক 'টি' সে আমার থেকে ১০ বছরের ছোট। সেই দিন চ্যাটে আমাকে কোড নেমে ডাকা শুরু করল । ওমা, যার সাথে পরিচয়ই হয়নি সে আমাকে ডাকছে কোড নেমে!!! অবাক হয়েছিলাম। পরে বুঝতে পারলাম এই বয়সের মানুষগুলো এই রকমই হয়। এইচ. এস. সি পরীক্ষা দিল । আশা করি, ভাল রেজাল্ট করবে। তারপর ভর্তি পরীক্ষা। আশা করি ভাল জায়গায় চান্স পাবে।



'বি' এর সাথে দেখা উত্তরাতে। রিক্সা থেকে নেমেই বলল, আরে পাশা ভাই, আমি ব্লগের ‘বি’। বেশি কথা বলার সুযোগ হয়নি। পরে জানতে পারলাম, উনি আমাদের ‘বি’ ভাই। অসাধারণ ভাল লেখেন। লেখালেখির পাশাপাশি গান, চিত্রনির্মাণ সহ অনেক কাজই করে যাচ্ছেন তিনি। অনেক স্বপ্ন নিয়ে বেড়ে উঠছেন তিনি। তার পথ চলা বিভিন্ন সময় সাহস দিয়ে, পরামর্শ দিয়ে আর সব সময়ের দোয়া দিয়ে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছি।


উপরের মানুষগুলো ছাড়াও অনেক মানুষ এর সাথে পরিচয় হয়েছে। যারা আমার পাশে ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন। ওরা অনেক অনেক বড় হবে এটাই আমার বিশ্বাস। এদের বড় হওয়াটাই আমি দেখে যেতে চাই।

2 comments:

WAhid Dilawar Al-Hakim said...

ভালো লাগলো.. সবার জন্য শুভকামনা রইলো.. :)

অনেকদিন পর ব্লগে আসলাম.. কেমন আছেন পাশা ভাই? আমি ।আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।

golden bangla 24 said...

ব্যাস। হলুদ পাঞ্জাবী আর খালি পায়ে সটান ঢাকার রাস্তায়। আর আমরা পেছনে হাঁটছি। কেউ কেউ আবার সেই ড্রাগ এডিক্ট যুবকটির মত হাঁটার তৎপরতায় হিমুকেও ওভারটেক করে বেরিয়ে যাচ্ছে। অতি-হিমু বলে কি কিছু হয়? হলেও, ওটা কোন কাজের কথা নয়। হিমু হওয়াতেই বাহাদুরি। আসুন, আমরা হিমুর পা ফেলা মনোযোগ সহকারে লক্ষ্য করি। হিমুর সঙ্গে হাঁটি।

himo mama ,
himo