Tuesday, November 18, 2008

সাদা পোষাকে আর কালি দিবেন না।

স্কুলে থাকা অবস্থায় আমাদের ক্লাসের এক মেয়ে এক ছেলের প্রেম পড়েছিল। এটা একটা সাধারণ ঘটনা স্কুলের ছেলে মেয়েরা একে অন্যের সাথে প্রেম করবে। কিন্তু এ ঘটনাটা আলোচিত হয়েছিল শুধুমাত্র এ কারণে যে মেয়েটি ছিল বোরকাওয়ালী। রক্ষণশীল পরিবারের হওয়ার পরও মেয়েটি ছেলেটির সাথে প্রেম করত। একবার পিকনিকে তারা একাকিত্বে দেখা করে। আর যা হওয়ার তাই হল মেয়েটির ব্যাপারে আলোচনা আবারো তুঙ্গে। কারণ আর কিছুই নয় মেয়েটি বোরকাওয়ালী অথবা রক্ষণশীল পরিবারের মেয়ে। এই মেয়ে কিভাবে একটা ছেলের সাথে প্রেম করে। মেয়েটির ভাইয়ের সাথে ভাল সম্পর্ থাকায় আমাকেও কথা শুনতে হয়েছিল। সাদা জামাতে কালো কালি লাগলে যেমন সবার চোখে লাগে সে ভাবেই এটা সবারই চোখে লাগত ।

আমার পরিচিত আর এক বড় ভাই বিয়ে করল সংগঠন এর এক মেয়েকে। দুইজনেই একই সংগঠনের ফলে তাদের মধ্যে মিল হওয়ার কথা । কিন্তু হল অন্যটা, তাদের ভিতর মিল না হয়ে বিরোধ লেগেই আছে। এমন অবস্থা যেন বিয়ে ভেঙ্গেই যায়। মানসিকতার মিল না হওয়ায় তাদের বিরোধ হচ্ছে।তাদের একমাত্রসন্তানের কারণেই হয়ত তারা আলাদা হতে পারছে না। এটাও অনেক পরিবারের স্বাভাবিক ঘটনা হলেও তারা সংগঠনের লোক হওয়ায় পোষাকে কালি লাগার মত এটাও স্পষ্ট হয়ে সবার চোখে লেগেছে।


আর একটা ঘটনা, আমাদের পাশের বাসার এক ভাই বিয়ে করার জন্য মেয়ে খুজছেন অনেকদিন ধরে। ভাল মেয়ে মানে সংগঠনের মেয়েই খুজছেন তিনি। কিন্তু সব কিছু মিললেও সংগঠনের মেয়ে পাওয়া যাচ্ছে না। তার ভাইভাবী মিলে অনেকদিন মেয়ে খুজার পর সবদিক দেখে এক মেয়ের সাথে তার বিয়ে ঠিক করলেন। মেয়ের গায়ে হলুদ এর পর্বও শেষ। এবার বাকী শুধু বিয়ে পড়ানোর ।কিন্তু না, তিনি বিয়ের আগের দিন তার বন্ধুর মাধ্যমে কোন এক সংগঠনের মেয়ের খোজ পেলেন। বিয়ের দিন বরযাত্রী তৈরী থাকলেও বরকে পাওয়া গেল না। তিনি তার পছন্দের মেয়ের জন্য এই বিয়ে আর করবেন না। আর মেয়ে পক্ষ মেয়েকে কনে বেশে সাজালেও বিয়ে দিতে পারল না। এটাও বিয়ের ক্ষেত্রেসাধারণ ঘটনা। কিন্তু লোকটি সংগঠনের হওয়ায় বিষয়টি সাদা পোষাকে কালি পড়ার মত দেখা যায় দগদগ করে।

প্লীজ, আপনার আশে পাশে যারা আছে তারা আপনাকে খেয়াল করছে। তারা আপনাকে অন্যরকম চোখে দেখে তাই আপনার ব্যবহারের দিকে খেয়াল রাখুন।

Wednesday, November 12, 2008

Sunday, September 21, 2008

Friday, August 15, 2008

অজানার পথে যাত্রা....

প্রতিটি দিন এখানে কাটছে এক একটা দুঃস্বপ্নের মধ্য দিয়ে। কোনদিন কি হয়ে যায় বলা যাচ্ছে না। আওয়ামীলীগ নামের দলটির সাথে আমার কোন শত্রুতা না থাকলেও তারা আমাকে শত্রু মনে করছে। যেকোন সময় বিপদে ফেলে দেয়ার ধান্দায় আছে। জানি না কি হবে?

বিদেশ যাওয়ার জন্যই আমার এই গ্রামে আসা। ভাল ভাবে বেচে থাকার জন্যই ছোট বেলা থেকে রাজধানীতে বড় হলেও এখন গ্রামে আছি। ক্যারিয়ারের বিশাল এক ধাক্কা যাচ্ছে। জানি না , মুক্তি পাব কিনা এই আজাব থেকে। শুধুই ভাবছি কিভাবে মুক্তি পাওয়া যায়।

আমার এক বন্ধুর কথা বলি। তার অনেকদিন চাকরি হচ্ছিল না। সে মনের দুঃখে আল্লাহর কাছে নিয়মিত তাহাজ্জুদ পড়া শুরু করল। এক সময় অনাকাঙ্থিতভাবে তাকে একটি ভাল চাকরির ব্যবস্থা করে দিলেন।

আমার আরেক বোনের কথা বলি। যার কম্পিউটার সাইন্স ভাল লাগছিল না। কম্পিউটার সাইন্স ভাল না লাগার কারণে কম্পিউটার চেঞ্জ করে বায়োলজিতে চলে গেল। যাওয়ার আগে সে ইশতেখারা করেছিল। ফলাফল এখন সে ভাল রেজাল্টের অধিকারী।

আমার বিপদের মুহুর্তগুলোতে শুধু আল্লাহকেই স্মরণ করেছি। জানি না, আল্লাহ কবে আমাকে সেই মুক্তির দিনটি দিবেন। তবে আমার বিশ্বাস আল্লাহ আমাকে ঠকাবেন না।

Thursday, July 31, 2008

ব্যবহার শেখাটা জরুরী

পৃথিবীতে যত অঘটন ঘটছে তার মূলে আর কিছু্‌ই নয় আছে মূলত সঠিক ব্যবহার না করা । আপনার বাচ্চাটা অন্য একটা বাচ্চার নাক ফাটিয়ে ফেলতে পারে যদি সে আপনার কাছ থেকে ভাল ব্যবহার না শেখে। কিন্তু বাচ্চাটাকে যদি আপনি শেখাতেন মানুষের সাথে ভাল ব্যবহার কর। তুমি যদি আজকে কারো সাথে ভাল ব্যবহার কর। আল্লাহই তোমার সাথে ভাল ব্যবহার করবেন।

শিক্ষার বয়স মানুষের ছোটবেলা । ছোটবেলায় বাচ্চাদের মন মগজে যা ঢুকিয়ে দেয়া হয় সেটা তার সারাজীবন মনে থাকবে। স্কুলে অনেক বাচ্চাকে মারামারি করে মারাত্মক সব ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়।কিছু দিন আগে উত্তরা হাই স্কুলে এক বাচ্চা আরেক বাচ্চার চোখে পেন্সিল ঢুকিয়ে দিয়েছে। বুঝতেই পারছেন অবস্থা!!

আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাটাকে আমি এজন্য বেশি দোষ দেই। কারণ এখানে নৈতিক শিক্ষা বলে কোন শিক্ষা আমার চোখে পড়েনি।মালেশিয়ার আজকের এই পরিবর্তনের জন্য দায়ী তাদের শিক্ষা ব্যবস্থা। শিক্ষাব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তনের জন্য তারা ধর্মকে বেছে নেয়নি, বেছে নিয়েছিল নৈতিক শিক্ষাকে।নৈতিক শিক্ষার ভিত্তি কোথায়? নিশ্চয়ই ধর্ম। ইসলাম তো এক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে। আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে ধর্মে (এস.এস.সি পর্যায়ে)৫০ নম্বর করাতে জামাতে ইসলামী অনেক আন্দোলন করেছিল ঠিকই। কিন্তু জোট সরকারের আমলে তারা নৈতিক শিক্ষার কোন ব্যবস্থা করতে পারেনি।

আমার এক ছোট ভাই (ছাত্রদলের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের নেতা) কে নিয়ে এক রেস্টুরেন্টের খেতে বসেছি। সে একটু ভুল করে তার প্লেটের পানি একজনের গায়ে ফেলে দিল। তাকে বল্লাম, তুমি স্যরি বললে না কেন? সে বললো, স্যরি বললে তো আর তার ক্ষতি পুষিয়ে দেয়া যেত না।পানি লাগা ছেলেটি আমাদের কথার কারণে সেখান থেকে চলে গেল। কিন্তু সেই ছেলেটি যদি হতো তার বিপরীত মতাদর্শের তাহলেই হতে পারতো বড় ধরনের মারামারি। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে মারামারি গুলো এসব তুচ্ছ ঘটনা থেকেই সূত্রপাত হয়।


মাদ্রাসার ছাত্ররাও এক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে আছে। হয়ত ভুল করে আমার সাথে কোন হুজুরের পায়ের সাথে পা লেগে গেছে। আমি স্যরি বল্লেও হুজুর থাকেন নির্বিকার। হুজুর রা শুধু মানুষের বাড়ীতে দাওয়াত খেতেই পারেন কাউকে দাওয়াত দিতে পারেন না। একথা অনেক প্রচোলিত। অনেক হুজুরকে সারাজীবন সালাম দিয়েই গেলাম কারো কাছ থেকে কোন সালাম পেলাম না। যাই হোক, দ্বীনী শিক্ষায় শিক্ষিতরা অনেক পিছিয়ে আছে ব্যবহার এর দিক থেকে।

আল্লাহ তায়ালা কেয়ামতের দিন দুইটা বিষয়ের খবর নিবেন--একটা আল্লাহর হক। আর একটা বান্দার হক। আল্লাহর হক ঠিকভাবে পালন না করলেও তা আল্লাহ নিজগুণে ক্ষমা করে দিতে পারেন কিন্তু বান্দার হক। তা যতক্ষণ বান্দা তা ক্ষমা না করবে ততক্ষণ তিনি ক্ষমা করতে পারবেন না।

Tuesday, July 22, 2008

আপনি, তুমি , তুই

আমরা আপনি, তুমি ,তুই এগুলো ব্যবহার করি সম্পর্কের ভিত্তিতে। পরিচয় এর শুরুতে আমরা আপনি দিয়েই শুরু করি। আপনি থেকে তুমি তারপর একান্ত আপন হলে সে সম্পর্ক যেতে পারে তুই তে।



সাধারনত সম্মানিত ব্যক্তিদের সাথে সম্পর্কের শুরু আপনি দিয়েই। অফিসিয়াল ভাষাও হয় আপনিতে। বাপের বয়সি লোকটিও আপনাকে অফিসিয়াল নিয়মের কারণে আপনি করে বলতে বাধ্য।

আর তুমি কথাটি আপনদের মধ্যেই হয়ে থাকে। বন্ধুত্বটা শুরু হয় তুমি দিয়েই। প্রিয়জন বড় হলেও তাকে অনেকে তুমি করে বলে আন্তরিকতা দেখিয়ে। বাপ-মাকেও অনেকে তুমি করে বলে আদর করে।

আর একান্ত আপন ভাই বোনদের তুই করে বলি আমরা। তুই শব্দ মনে হয় একান্ত আপনদের জন্য।

ভুল করলাম না তো। আর হ্যা, আমরা তুই শব্দটি ব্যবহার করি তুচ্ছ করার জন্য। রাস্তার টোকাইটাকে আমরা কি বলি? তুই না তুমি। তুই , তুই ই তো বলে থাকি। তাকে তুচ্ছ করার জন্য বলি। তাকে তুমি কি করে বল্লে, অসুবিধাটা কোথায়?


আমার বন্ধুদের দেখেছি রিক্সা চালককে তুই করে বলছে। "এই খালি, তুই যাবি।" "এই
কার্জন হল যাবি।" "তুই এত বাড়া চাস কেন?" ইত্যাদি ইত্যাদি। অনেকে বাপের বয়সি লোককেও তুই করে বলতে দ্বিধা বোধ করে না। সেদিন এক রিক্সা চালক দু:খ করে বলছিল, তাকে তার ছেলের বয়সি ছেলেরা তুই করে বলে। তিনি বললেন তার বয়স ৪৮ বছর। ইন্টার পর্যন্ত পড়াশুনা করেছিলেন। বিভিন্ন কারণে উনি আজ রিক্সাচালক। যাই হোক, উনি আক্ষেপ করলেন আজকের ছেলেদের নিয়ে। আমি তাকে আপনি করে বলার কারণে উনি খুব খুশি হলেন।

লোকজনদের একটু শ্রদ্ধা দিয়ে কথা বললে সমস্যা কোথায়?