Thursday, January 29, 2009

কি আশ্চর্য!

ভাইয়া আমার ইউনি যেতে ভাল লাগে না। কেন? আমার বান্ধবীদের পছন্দ হয় না। কেন? তারা খুব স্বার্থবাদী । সারাক্ষণ পড়াশুনা আর পড়াশুনা। পড়াশুনার বাইরে যে একটা দুনিয়া আছে তারা বুঝতেই চায় না। তাতে তোমার কি? আমার বন্ধুরা আমার সাথে মিলে না। এসব কারণেই আমার বোন মাঝে মাঝে ইউনি যাওয়া মিস করে।

কিছু দিন আগে ওরা যাবে সার্ক ট্যুরে ।ভাইয়া আমাকে একটা স্পন্সর মেনেজ করে দাও না। আমি স্পন্সর পাব কোথায়? স্পন্সর না হলে তো যাওয়া যাবে না। তুমি তোমার বন্ধুদের বলে দেখ না, কি করা যায়? আমি আমার চেষ্টা করে গেলাম। কিন্তু স্পন্সর ম্যানেজ করতে পারলাম না। ওকে পাসপোর্ট করতে বল্লাম। কয়েকদিনের মধ্যে পাসপোর্ট হয়েও গেল। কিন্তু বিধিবাম, মোম্বাই এর বোমা হামলার কারণে ইন্ডিয়াতে ট্যুরিস্ট ভিসা দেয়া বন্ধ। দেশেই ট্যুর করতে হবে। কোন উপায় নাই। ডিপার্টমেন্ট থেকে ঠিক হল রাঙ্গামাটি, কক্সবাজার, সেন্টমার্টিন যাবে । ওর একই কথা এই মেয়েগুলোর সাথে এক সপ্তাহ থাকতে হবে। আমি বল্লাম --মন চাইলে যাও। এ রকম সুযোগ আর পাবা না।

সে গেলও সেই ট্যুরে। ট্যুর থেকেই, সে কি গল্প। আমরা আজকে রাঙ্গামাটি যাচ্ছি। সারারাত জার্নি করেছি। খুব সু্ন্দর জায়গাটা। ভাইয়া জান, আমাদের এখানে লুডু ম্যাচ হচ্ছে। আমি এখনও টিকে আছি। ফাইনালে এক স্যারের সাথে খেলা হবে। সবাই বলছে খেলাতে হেরে যেতে ।তাহলে বিষয়টি নিয়ে আরও মজা করা যাবে। কিন্তু সে বোরহান স্যারকে হারিয়ে দিয়ে জিতে গেল। ভাইয়া জান, আমি লুডু খেলায় ফার্স্ট হয়েছি।পুরস্কার হিসাবে পেয়েছি একটি সুটকি মাছ আর লুডু খেলার ঘর। ভাইয়া, সুটকি মাছ তো আর এভাবে আনা যাবে না। তাই এটাকে কাটাকুটা করলাম। এটা করতে করতে আমার জান শেষ।

ওরা সুন্দর ভাবেই ফিরে আসল ঢাকাতে। এখন ওর ভিতরে একি পরিবর্তন! ওকে একবার হলে সিট মেনেজ করে দেয়ার পরও সেই উত্তরা থেকে সে নিয়মিত ক্লাস করে । আর ও কিনা কালকে আমাকে ফোন করে বলছে, আমি হলে থেকে গেলাম। ঝুমু আমাদের রান্না করে খাওয়াবে। কোন চিন্তা করতে আম্মা কে নিষেধ করে দিও।শুধু সেটাই নয়, ও ট্যুর এর পর এক দিনের জন্য ইউনি মিস দেয়নি । সবাই তো অবাক! এই মেয়ে এত নিয়মিত হল কিভাবে!!

Wednesday, January 21, 2009

হাজার মানুষের মাঝে তুমি আমার বন্ধু

ছেলেটির সাথে আমার পরিচয় বুয়েট কোচিং করার সময়। তখন কোচিং এর কোর্স শেষ দিকে । হাতে প্রিপারেশন এর সময় একদম কম। রেজাল্টও তত ভাল না। হাল্কা পাতলা ধরনের ছেলেটির প্রতি মায়াই হল। তার ডাকনাম টিপু। এরপর থেকে তার সাথে টুকটাক গল্প । কোথা থেকে পাশ করেছ? বাসা কোথায়? আব্বা কি করেন? দেশের বাড়ি এক জায়গায় আর ইন্টারের কলেজ করলে আরেক জায়গায়। আব্বুর বন্ধুর কলেজে পড়াশুনা করেছে। তার পরিবারের খোজখবর ইত্যাদি ইত্যাদি নিলাম। এক সময় কোচিং এর সময় শেষ হয়ে গেল। আর দেখা হয় না সেই বন্ধুটির সাথে।


দীর্ঘ আট বছর পর ইন্টারনেট এ চ্যাট করছি টিপুর সাথে । তার জিমেইল আইডির সাথে টিপু নামটি আছে। তাই তাকে জিজ্ঞাসা করলাম। আপনি কোচিং করেছেন কোথায়? তারপর কলেজ । ওম্মা, সব দেখি মিলে যাচ্ছে একে একে। কি আশ্চর্য? আপনি তাহলে সেই টিপু । আপনারা ভাইবোন অনেক ছিলেন। ঠিক বলছি না? হা আপনি ঠিক বলেছেন!!

তারপর ব্যক্তিগত আলাপচারিতা। কোথায় থাকেন? কি করেন? ভাইবোনদের অবস্থা কি? ভালই আছে আমার বন্ধু টিপু।

দীর্ঘ আট বছর পর খুজে পাওয়া বন্ধু টিপুকে পেয়ে আমি আসলেই খুশি।