Thursday, July 31, 2008

ব্যবহার শেখাটা জরুরী

পৃথিবীতে যত অঘটন ঘটছে তার মূলে আর কিছু্‌ই নয় আছে মূলত সঠিক ব্যবহার না করা । আপনার বাচ্চাটা অন্য একটা বাচ্চার নাক ফাটিয়ে ফেলতে পারে যদি সে আপনার কাছ থেকে ভাল ব্যবহার না শেখে। কিন্তু বাচ্চাটাকে যদি আপনি শেখাতেন মানুষের সাথে ভাল ব্যবহার কর। তুমি যদি আজকে কারো সাথে ভাল ব্যবহার কর। আল্লাহই তোমার সাথে ভাল ব্যবহার করবেন।

শিক্ষার বয়স মানুষের ছোটবেলা । ছোটবেলায় বাচ্চাদের মন মগজে যা ঢুকিয়ে দেয়া হয় সেটা তার সারাজীবন মনে থাকবে। স্কুলে অনেক বাচ্চাকে মারামারি করে মারাত্মক সব ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়।কিছু দিন আগে উত্তরা হাই স্কুলে এক বাচ্চা আরেক বাচ্চার চোখে পেন্সিল ঢুকিয়ে দিয়েছে। বুঝতেই পারছেন অবস্থা!!

আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাটাকে আমি এজন্য বেশি দোষ দেই। কারণ এখানে নৈতিক শিক্ষা বলে কোন শিক্ষা আমার চোখে পড়েনি।মালেশিয়ার আজকের এই পরিবর্তনের জন্য দায়ী তাদের শিক্ষা ব্যবস্থা। শিক্ষাব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তনের জন্য তারা ধর্মকে বেছে নেয়নি, বেছে নিয়েছিল নৈতিক শিক্ষাকে।নৈতিক শিক্ষার ভিত্তি কোথায়? নিশ্চয়ই ধর্ম। ইসলাম তো এক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে। আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে ধর্মে (এস.এস.সি পর্যায়ে)৫০ নম্বর করাতে জামাতে ইসলামী অনেক আন্দোলন করেছিল ঠিকই। কিন্তু জোট সরকারের আমলে তারা নৈতিক শিক্ষার কোন ব্যবস্থা করতে পারেনি।

আমার এক ছোট ভাই (ছাত্রদলের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের নেতা) কে নিয়ে এক রেস্টুরেন্টের খেতে বসেছি। সে একটু ভুল করে তার প্লেটের পানি একজনের গায়ে ফেলে দিল। তাকে বল্লাম, তুমি স্যরি বললে না কেন? সে বললো, স্যরি বললে তো আর তার ক্ষতি পুষিয়ে দেয়া যেত না।পানি লাগা ছেলেটি আমাদের কথার কারণে সেখান থেকে চলে গেল। কিন্তু সেই ছেলেটি যদি হতো তার বিপরীত মতাদর্শের তাহলেই হতে পারতো বড় ধরনের মারামারি। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে মারামারি গুলো এসব তুচ্ছ ঘটনা থেকেই সূত্রপাত হয়।


মাদ্রাসার ছাত্ররাও এক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে আছে। হয়ত ভুল করে আমার সাথে কোন হুজুরের পায়ের সাথে পা লেগে গেছে। আমি স্যরি বল্লেও হুজুর থাকেন নির্বিকার। হুজুর রা শুধু মানুষের বাড়ীতে দাওয়াত খেতেই পারেন কাউকে দাওয়াত দিতে পারেন না। একথা অনেক প্রচোলিত। অনেক হুজুরকে সারাজীবন সালাম দিয়েই গেলাম কারো কাছ থেকে কোন সালাম পেলাম না। যাই হোক, দ্বীনী শিক্ষায় শিক্ষিতরা অনেক পিছিয়ে আছে ব্যবহার এর দিক থেকে।

আল্লাহ তায়ালা কেয়ামতের দিন দুইটা বিষয়ের খবর নিবেন--একটা আল্লাহর হক। আর একটা বান্দার হক। আল্লাহর হক ঠিকভাবে পালন না করলেও তা আল্লাহ নিজগুণে ক্ষমা করে দিতে পারেন কিন্তু বান্দার হক। তা যতক্ষণ বান্দা তা ক্ষমা না করবে ততক্ষণ তিনি ক্ষমা করতে পারবেন না।

Tuesday, July 22, 2008

আপনি, তুমি , তুই

আমরা আপনি, তুমি ,তুই এগুলো ব্যবহার করি সম্পর্কের ভিত্তিতে। পরিচয় এর শুরুতে আমরা আপনি দিয়েই শুরু করি। আপনি থেকে তুমি তারপর একান্ত আপন হলে সে সম্পর্ক যেতে পারে তুই তে।



সাধারনত সম্মানিত ব্যক্তিদের সাথে সম্পর্কের শুরু আপনি দিয়েই। অফিসিয়াল ভাষাও হয় আপনিতে। বাপের বয়সি লোকটিও আপনাকে অফিসিয়াল নিয়মের কারণে আপনি করে বলতে বাধ্য।

আর তুমি কথাটি আপনদের মধ্যেই হয়ে থাকে। বন্ধুত্বটা শুরু হয় তুমি দিয়েই। প্রিয়জন বড় হলেও তাকে অনেকে তুমি করে বলে আন্তরিকতা দেখিয়ে। বাপ-মাকেও অনেকে তুমি করে বলে আদর করে।

আর একান্ত আপন ভাই বোনদের তুই করে বলি আমরা। তুই শব্দ মনে হয় একান্ত আপনদের জন্য।

ভুল করলাম না তো। আর হ্যা, আমরা তুই শব্দটি ব্যবহার করি তুচ্ছ করার জন্য। রাস্তার টোকাইটাকে আমরা কি বলি? তুই না তুমি। তুই , তুই ই তো বলে থাকি। তাকে তুচ্ছ করার জন্য বলি। তাকে তুমি কি করে বল্লে, অসুবিধাটা কোথায়?


আমার বন্ধুদের দেখেছি রিক্সা চালককে তুই করে বলছে। "এই খালি, তুই যাবি।" "এই
কার্জন হল যাবি।" "তুই এত বাড়া চাস কেন?" ইত্যাদি ইত্যাদি। অনেকে বাপের বয়সি লোককেও তুই করে বলতে দ্বিধা বোধ করে না। সেদিন এক রিক্সা চালক দু:খ করে বলছিল, তাকে তার ছেলের বয়সি ছেলেরা তুই করে বলে। তিনি বললেন তার বয়স ৪৮ বছর। ইন্টার পর্যন্ত পড়াশুনা করেছিলেন। বিভিন্ন কারণে উনি আজ রিক্সাচালক। যাই হোক, উনি আক্ষেপ করলেন আজকের ছেলেদের নিয়ে। আমি তাকে আপনি করে বলার কারণে উনি খুব খুশি হলেন।

লোকজনদের একটু শ্রদ্ধা দিয়ে কথা বললে সমস্যা কোথায়?