Friday, June 19, 2009

স্বপ্ন ও বাস্তবতা!!!

কয়েকদিন ধরে মনটা বিশেষ একটা ভাল নাই। ধুর, কিচ্ছু ভাল লাগে না। যে জীবনে কোন ফিলিংস নাই সেটা আবার জীবন হল। “চলছে গাড়ি যাত্রাবাড়ী” টাইপের জীবন আর ভাল লাগে না। ইউনি ভার্সিটির ক্লাস আর পড়াশুনা এগুলোর বাইরেও তো আরেক জীবন আছে। নিজের জীবন, প্রিয়তমার জীবন , তার হাত ধরে ঘুরতে যাওয়ার জীবন, কত্ত কিছু! উফ কবে আসবে সেইদিন, অনতত বুঝতে যদি পারি কে হচ্ছে আমার সেই প্রিয়তমা তাহলে তো মন্দ হয় না। কতই না এক্সাইটমেন্ট এই ইস্যুতে!
আজকে রাতের স্বপ্নটা ছিল অসাধারন। হ্যা, আমি দেখেছি আমার প্রিয়তমাকে। একবারে ডানা কাটা পরী। স্বপ্নে আমি আল্লাহর কাছে যা চাচ্ছি তাই হচ্ছে। বলছি, আল্লাহ এটা করে দাও। তিনি সেটাই করে দিচ্ছেন। একবার মনে আসল আচ্ছা, আমার প্রিয়তমা কে হবে। এটা কি জানা যাবে? এমনি আমার সামনে এসে হাজির হল আমার প্রিয়তমা। দেখতে খুবই সুন্দরী । অসাধারণ এক তন্বী নারী আমার সামনে। আমি তাকে দেখে বললাম, ওহ! এই মেয়ে। আমি তো একে চিনি। ঘুমের ভিতর দেখেই আমার খুশি খুশি লাগছিল। হ্যা, সকালে উঠে আমি এর ব্যাখ্যা করতে বসলাম। মেয়েটি ছিল আমার দেখা সবচেয়ে সুন্দরী। আমি যে রকম চাই সেই রকম মেয়ের সাথেই আমার বিয়ে হবে। তাকে চেনা চেনা লেগেছে তাহলে তার সাথে আমার মনের মিল হবে খুব বেশি। আর সে হবে আমার আগের পরিচিতি।উফ, স্বপ্নটা দেখে কতই না ভাল লাগছে। লজিক দিয়েই স্বপ্নটাকে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করলাম। তাতেই মনটা খুব ভাল লাগল। অন্যরকম একসাইটমেন্ট! এই না হলে জীবন!!
আমি মনে মনে হাসি যাই হোক আমার জন্য ভাল কিছুই আছে। আল্লাহ আমার জন্য ভাল একটা মেয়ে রেডি করে রেখেছেন।কাউকে তার স্বপ্নের কথা বলতে শুনলে আগ্রহ নিয়েই শুনি।

সেইদিন আমার বোন আমাকে বলছিল, সে অনেক খারাপ একটা স্বপ্ন দেখেছে। এক সাথে দুইটা মানুষকে গুলি করে হত্যা করেছে। বলতে বলতে সে হাসতে থাকে। সে বলছিল-- আমার বান্ধবী রিনি আর ওর বয় ফ্রেন্ড এর সাথে আমার খুবই ভাল সম্পর্ক ।তাদের উপর মাঝে মাঝে আমি রেগে উঠি কারণ তারা ফ্রী মিকসিং করে। আমার এই সব একদম পছন্দ হয় না। তাদের উপর রাগ করে আমি তাদের পর পর দুইটা গুলি করে তাদের হত্যা করে ফেললাম।তাদের হত্যার পর পিস্তলটা আমার হাতেই ছিল। আমি পিস্তলটা লুকানোর চেষ্টা করলাম। আমার হাতে ওদের রক্তের দাগও ছিল। আমি এটা লুকানোর কথা একে বারেই ভুলে গেলাম। আমার মাথাটা আসলেই গরম । মাথা গরম হয়েছে তাই বলে একসাথে জোড়া খুন করে ফেলব তাতো হতে পারে না। খুন করে আমি পুলিশের হাতে ধরা দিতে চাইলাম না। আমি লুকোচুরির চেষ্টা করছি। এই ভয়ে আছি, যদি কেউ বুঝতে পারে আমি এই হত্যা করেছি তাহলে আমার বাবা-মা মানুষের কাছে ছোট হয়ে যাবে। আমি বার বার চেষ্টা করছি বাচার জন্য।আমি ধরা খেলে জেলে চলে যাব, এতে শাস্তি পেয়ে নতুন করে জীবন শুরু করার সুযোগ আছে।কিন্তু এই ভয়ে আমি ধরা দিচ্ছি না একজন জেল খাটা মেয়েকে বিয়ে করবে কে? কি সুন্দর লজিক!! ঘুমের মধ্যেও লজিক আমার ঠিক ছিল। এই অবস্থায় আমার ঘুম ভেংগে গেল। এটা বলেই ও ফিক করে হাসি দিল। যাক, এটা স্বপ্নে হয়েছিল বলে রক্ষা। আমার বোনের কথা গুলো শুনে ভাবতে লাগলাম এর ব্যাখ্যা কি হতে পারে? তার ঘনিষ্ট দুইজন মানুষকে সে খুন করেছে। মানে কি? মানে হল, তার সাথে ঘনিষ্ট দুইজন মানুষের সাথে সে প্রতারনার আশ্রয় নিবে । যারা হবে তার একান্ত কাছের। তারপর সে এটা লুকানোর চেষ্টা করবে। কিন্তু লুকোতে পারবে না। কারণ এর সিমটম তার গায়ে লেগে থাকবে। সে এর জন্য অনুতপ্ত হবে। কিন্তু শুধরানোর কোন সুযোগ সে পাবে না। সে মনে মনে ভাববে যদি আমি স্বীকার করলে সবার কাছে আমার আপনজনরা ছোট হয়ে যাবে । তারপর সে এটা তার জীবনে বিশাল রকমের জটিলতা তৈরী করবে। উফ, আমি এইগুলো কি ভাবছি। না, এই ব্যাখা মেনে নেয়া যায় না। এই রকমই স্বপ্ন সত্য হতেই পারেই না। আমি যা লজিক দিয়ে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করছি তা কোনদিন হবেও না। আমার বোনটার জীবনে এই ধরনের কোন ঘটনা ঘটবেও না।

আসলে আমি কেনই বা স্বপ্নের ব্যাখ্যা লজিক দিয়ে করতে গেলাম। আর আমি তো আমার ভবিষ্যত জানি না। আমি জানি না কোথায় আছে আমাদের আগামীদিনগুলো। আমি ভুলে যেতে চাই আমার স্বপ্নের ব্যাখ্যাগুলো । ভাবতে চাই, আমরা সবাই স্বাভাবিক একজন মানুষ। যারা ভবিষ্যত সম্বন্ধে কিছুই জানি না। আমরা কাজ করে যেতে আসছি, কাজ করে যাচ্ছি। এইত আমাদের জীবন। যা আমাদের নিয়তি তা হবেই। আল্লাহ এই ধরনের বড় দুর্ঘটনার হাত থেকে আমাদের তুমি রক্ষা কর।

[এই গল্পটা সম্পূর্ণ আমার কল্পনার । এটার সাথে বাস্তবতার কোন মিল নাই। ]

1 comment:

Aero River said...

এত সুন্দর লেখেন, কিন্তু অনিয়মিত। দুঃখজনক। নিয়মিত লিখুন। আপনার লেখা পড়তে চাই।